আবু ইউসুফ নিজস্ব নিউজ রুম।
সাবেক মেজর পরিচয় দানকারী দেলোয়ারের প্রতারণার শিকার সাংবাদিক হারুন।সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় সাবেক মেজর পরিচয়দানকারী দেলোয়ার হোসেনের একটি ভিডিও চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। ভিডিওটি জালিয়াতির মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন জার্মান সংবাদ মাধ্যম ডয়েচে ভেলের বাংলাদেশ প্রতিনিধি হারুন উর রশীদ। নিজের ফেসবুক পেজ ও ইউটিউব চ্যানেলের ভিডিও নিয়ে এক ডিজিটাল প্রতারণার শিকার হয়েছেন বলে
জানিয়েছেন তিনি। সাংবাদিক হারুন উর রশীদ সমসাময়িক আলোচিত বিভিন্ন ঘটনা নিয়ে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ও ইউটিউব চ্যানেলে লাইভ করেন, অতিথিদের যুক্ত করে টক শো চালান। হঠাৎ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে খেয়াল করেন, তার চ্যানেলের ভিডিও থেকে তার অংশটুকু কৌশলে কেটে নিয়ে অন্য একজনের ভিডিও’র সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। ভিডিওটি এমনভাবে এডিট করা হয়েছে যে
বেশিরভাগ মানুষই বুঝবেন না যে এটি কৌশলে ভিন্ন ভিন্ন ভিডিও থেকে কেটে নিয়ে জুড়ে দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। বরং মনে হবে, মূল চ্যানেলে যেভাবে অতিথিদের সঙ্গে কথা বলে থাকেন এবং সাক্ষাৎকার নিয়ে থাকেন, একইভাবে তিনি এই ব্যক্তিরও সাক্ষাৎকার নিয়েছেন। সূত্র বলছে, অবসরপ্রাপ্ত মেজর পরিচয়দানকারী দেলোয়ার হোসেনের একটি ডিজিটাল প্রতারক টিম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে অপব্যবহার করে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার ও গুজব ছড়িয়ে যাচ্ছে নিয়মিত। অবসরপ্রাপ্ত মেজর পরিচয়দানকারী দেলোয়ারের তত্ত্বাবধায়নে এবার ডিজিটাল প্রতারণার শিকার হয়েছে ‘লাইভ উইথ হারুন’।
এ বিষয়ে সাংবাদিক হারুন উর রশীদ বলেন, আমার ফেসবুক পেজ ও ইউটিউব চ্যানেলের ভিডিও নিয়ে এমন ডিজিটাল প্রতারণার শিকার হয়েছি। জার্মান সংবাদ মাধ্যম ডয়েচে ভেলের বাংলাদেশ প্রতিনিধি আমি। ডিজিটাল প্রতারণার অভিযোগটি নিয়ে মঙ্গলবার (৬ অক্টোবর) কলাবাগান থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি ( জিডি) করেছি। জিডি নম্বর ২৭৬।
এদিকে জিডিতে হারুন উর রশীদ লিখেছেন, ‘লাইভ উইথ হারুন’ নামে ফেসবুকে তার একটি পেজ ও ইউটিউবে একটি চ্যানেল রয়েছে। এই পেজ ও চ্যানেল থেকে প্রচারিত বিভিন্ন টকশো থেকে তার ভিডিও’র অংশ নিয়ে অন্যের ছবি, শব্দ ও ভিডিও জুড়ে দিয়ে একটি প্রতারক চক্র তার অনুষ্ঠানকে বিকৃত ও তাকে বিপদগ্রস্ত করার চেষ্টা করছে।
জিডিতে ইউটিউব ও ফেসবুকে প্রচারিত দুইটি ভিডিও’র লিংক যুক্ত করার পাশাপাশি তার নিজের চ্যানেলের যে ভিডিও থেকে তার অংশগুলো কেটে নেওয়া হয়েছে, সেটির লিংকও সংযুক্ত করেছেন হারুন। তিনি উল্লেখ করেন, যে ভুয়া ভিডিও তৈরি করা হয়েছে, ওই ভিডিওতে দেখানো বক্তাকে তিনি কখনোই তার কোনো টকশোতে আমন্ত্রণ জানাননি বা তার সঙ্গে কোনো অনুষ্ঠানেই অংশ নেননি। এ পরিস্থিতিতে প্রতারকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।
জানতে চাইলে সাংবাদিক হারুন উর রশীদ বলেন, আমাকে বেকায়দায় ফেলতে ও সম্মানহানি করতেই অবসরপ্রাপ্ত মেজর পরিচয়দানকারী দেলোয়ারের এই প্রতারক চক্র পিছু নিয়েছে বলে আমি মনে করি। সেটা না হলে আমি যে অনুষ্ঠান করিনি, সেই অনুষ্ঠানে আমার ছবি কী করে এলো? সেখানে আবার আমাকে স্থির দেখাচ্ছে। অর্থাৎ আমার ভিডিও থেকে আমার কিছু অংশ কেটে নিয়ে ওই ভিডিওতে বসিয়ে দিয়েছে। সেই ভিডিওতে অবসরপ্রাপ্ত মেজর পরিচয়দানকারী দেলোয়ারকে দেখা যাচ্ছে, সে নোংরাভাবে উসকানি দিচ্ছে।
তিনি বলেন, এমনভাবে ভিডিওটি উপস্থাপন করা হয়েছে যে দেখলেই মনে হবে হারুনই মনে হয় ইন্টারভিউ নিচ্ছে। বিষয়টি নজরে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমি সাইবার ক্রাইম ইউনিটকে জানিয়েছি এবং আমি জিডি করেছি। আশা করছি প্রতারক চক্র শনাক্ত ও ধ্বংস হবে। বিষয়টি স্পর্শকাতর উল্লেখ করে হারুন বলেন, দেলোয়ার সামরিক বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সদস্য কিনা আমার জানা নেই। তবে হয়ে থাকলে, তার এই ধরনের অপকর্মে সশস্ত্রবাহিনীর মর্যাদা ক্ষুন্ন হচ্ছে এতে সন্দেহ নেই।
জিডির বিষয়ে জানতে চাইলে কলাবাগান থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আরিফ হোসেন বলেন, সাংবাদিক হারুন উর রশীদ একটি জিডি করেছেন। ওই জিডি তদন্তের ভার আমাকে দেওয়া হয়েছে থানা থেকে। তবে তদন্তের আগেই সেটি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সাইবার ক্রাইম বিভাগে পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে সাইবার ক্রাইম বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার নাজমুল ইসলাম সুমনের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সাইবার ক্রাইম বিভাগ অভিযোগটি খতিয়ে দেখবে। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Leave a Reply