বিধান কুমার বিশ্বাস।
রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের হাতি মোহন খামার মাগুরা জলমহালের ইজারা বিজ্ঞপ্তি মাধ্যমে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে চালান মারফতে টাকা জমা দিয়েও দখলসত্ব বুঝে পায়নি মিজানপুর, আটদাবুনিয়া, রাজবাড়ী টাউন মৎস্য জীবী সমিতি।
প্রকাশ গত ১১ ই জানুয়ারি ২০১৮ ইং তারিখে বালিয়াকান্দি উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা এক টেন্ডার বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে হাতি মোহন খামার মাগুরা জলমহলের নিলাম বিজ্ঞপ্তি আহবান করেন। এই টেন্ডার বিজ্ঞপ্তি শর্ত অনুসারে উক্ত সমিতির পক্ষে সমিতির সভাপতি শচীন্দ্রনাথ সরকার নিলামে অংশগ্রহণ করেন। তিনি সর্বোচ্চ দরদাতা বিবেচিত হওয়ার পর ১৩ মার্চ ২০১৮ ইং তারিখে বাংলা ১৪২৫-১৪২৭ সনের ইজারা মূল্য পরিশোধের জন্য চিঠি প্রেরণ করেন। নিয়ম অনুযায়ী ইজারা মূল্য ১৫% মূল্য সংযোজন কর ও ৫% উৎসে কর সহ সর্বমোট ৪ লক্ষ ৮ হাজার ২ শত ৪০ টাকা স্থানীয় সোনালী ব্যাংকে বালিয়াকান্দি শাখায় চালান মূলে জমা দেন। উক্ত চালানোর কপি ও তিনশত টাকার নন জুডিশিয়াল স্টাম্প জমা প্রদান করেন। স্টাম্প ও টাকার চালান জমা দেবার পর দীর্ঘ আট মাস উক্ত সমিতির সভাপতি চালান জমা দেবার পর উক্ত সমিতির সভাপতি শচীন্দ্র নাথ সরকার বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহি অফিসে ঘোড়ার পরেও দলিল সম্পাদন ও জলমহলের সত্য বুঝে পায়নিই। পরে বাধ্য হয়ে সমিতির সভাপতি ২৩ শে জানুয়ারি ২০১৯ ইং তারিখে মুল টাকা সহ ক্ষতিপূরণ চেয়ে সংশ্লিষ্ট মহলে আবেদন করেন। এ বিষয়ের বিষয়ে মীমাংসার জন্য বালিয়াকান্দি নিবার্হী কর্মকর্তা ৪ঠা ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ইং তারিখে শুনানির দিন ধার্য করিয়া নোটিশ প্রেরণ করেন যে ফেব্রুয়ারির ১১ তারিখে শুনানি গ্রহণ করা হবে। ঘটনার দিন নিবার্হী অফিসারের আদেশক্রমে দলিল সম্পাদন করা হয় এবং জলমহল হস্তান্তরের বিষয়ে আলোচনা হয়। কিন্তু সমিতির সভাপতি পিছনের তারিখ বসিয়ে জলমহল বুঝিয়া নিতে আপত্তি জানান। পরবর্তীতে বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসকের সহিত আলোচনা জন্য ১৪২৫ সালের টাকার বিনিময়ে ১৪২৬ সনের টাকা সমন্বয়ক জলমহল হস্তান্তর করা যায় কিনা বিষয়টার চিঠি মারফতে আশ্বস্ত করা হয়। কিন্তু দেখা যায় উল্লেখিত বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণের চিঠি প্রেরণ না করিয়া বালিয়াকান্দি নির্বাহি অফিসার ৮ শে ফেব্রুয়ারি ২০১৯ তারিখে পরবর্তী ১৪২৬ ইজারা মূল্যের জন্য পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে আবারও ৪ লক্ষ ৮ হাজার ২ শত ৪০ টাকা পরিশোধের জন্য। মৎস্যজীবী সমিতির তখন ১৪২৫ সনের জন্য প্রদেয় টাকার বদৌলতে ১৪২৬ সালের ইজারামূল্য সমন্বয় কোরিয়া জলমহল সমিতির নিকট হস্তান্তরের জন্য আবেদন প্রেরণ করেন। অদৃশ্য কারণবশত নির্বাহী কর্মকর্তা আমলে না নিয়ে সমিতির সভাপতির সিদ্ধান্ত বাতিল ঘোষণা করিয়া ৯ই এপ্রিল ১৯ ইং তারিখে সমিতির জলমহলের ইজারা সহ প্রে-অর্ডারের ৬৮ হাজার টাকা বাতিল বলিয়া ঘোষণা করে। পরবর্তীতে এডভোকেট হাবিব হেনা সমিতির পক্ষে উপজেলা নির্বাহি অফিসার বরাবর বিষয়টির বিষয়ে এক মাসের মধ্যে উত্তরের আশা প্রসন করে লিগ্যাল নোটিশ পেরন করেন। কিন্তু নির্বাহি অফিসার বিষয়টি আমলে না নিয়ে উত্তর প্রদানের প্রয়োজন মনে করেন নাই।
সমিতি বাধ্য হয়ে বাংলাদেশে হাইকোর্টে ১০০৪৭ নম্বর রিট মামলা দায়ের করেন ২১ শে অক্টোবর ২০১৯ ইং তারিখে। মহামান্য হাইকোর্ট বিবাদীদের প্রতি শোকেস সহ ৬ মাসের জন্য স্থগিত আদেশ প্রদান করেন। উক্ত আদেশের কপি সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি সমিতির পক্ষে প্রেরণ করেন। উপজেলা নির্বাহি অফিসার তাচ্ছিল্যভরে তা প্রত্যাখ্যান করে যাহা লিখিত আকারে জেলা প্রশাসককে সমিতির সভাপতি ৫ নভেম্বর ১৯ ইং তারিখে অবহিত করান। পরবর্তীতে সমিতির সভাপতি ২২ শে সেপ্টেম্বর ১৯ ইং তারিখে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ৩৪৫/১৯ নম্বর মিস পিটিশন ১৪৪ ধারা জারি করেন। যাহা বালিয়াকান্দি থানার এসআই আব্দুল ওয়াদুদ বিবাদীদের নিকট ২৬ নভেম্বার ১৯ ইং তারিখে শান্তি ভঙ্গের আশঙ্কায় নোটিশ জারি করেন। নোটিশ জারির পর নালিশি মৎস্য খামারে আদালতের নির্দেশ উপেক্ষা করে মাছ আহরণ করে চলছে পূর্ব লিজ দাতাগণ।
এদিকে মহামান্য হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ ২৮ শে এপ্রিল ২০২০ পর্যন্ত থাকলেও তা বর্ধিতকরণ করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সমিতির পক্ষে পত্র প্রেরণ করা হয় ১১ ই আগস্ট ২০২০ তারিখে।
এ বিষয়ে মিজানুর, আটদাবুনিয়া, রাজবাড়ী টাউন মৎস্য জীবী সমিতির সভাপতি শচীন্দ্রনাথ সরকার বলেন আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। অতএব বাংলাদেশের জনগণ দেখুক যে, স্বাধীন দেশেও পরাধীনতায় ভুগতে হয় তাও আবার সরকারি দপ্তরে দপ্তরে।
Leave a Reply