সিলেট জেলা প্রতিনিধি দৈনিক বাংলাদেশ ৭১ সংবাদ।সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে সিলেটের অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান টিউশন ফি ছাড়া অতিরিক্ত টাকা নিচ্ছে- এমন অভিযোগ করেছেন বেশ ক’জন অভিভাবক। করোনা পরিস্থিতির মধ্যে এমন আচরণ মেনে নিতে পারছেন না তারা। অদৃশ্য মহামারি করোনা ভাইরাস। ভয়াল এই ভাইরাসের কারণে গত ১৮ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার সিন্ধান্ত নেয় সরকার। পরিস্থিতির উত্তরণ না হওয়ায় মার্চ থেকে শুরু হয়ে এখনো বন্ধ রয়েছে সরকারি-বেসরকারি সেই প্রতিষ্ঠানগুলো। কয়েক দফায় খুলে দেয়ার প্রস্তুতি নিলেও শেষ পর্যন্ত তা বাস্তবায়ন হয়নি। অতিসম্প্রতি সরকার পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষা এবং মাধ্যমিক স্তরের বার্ষিক পরীক্ষা বাতিল করেন ।
শুধু বাতিল নয়, শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন সচল রাখতে নানামুখি প্রশংসনীয় উদ্যোগও গ্রহণ করা হয়। এ ছাড়া, সরকারি এবং বেসরকারি স্কুল এবং কলেজগুলোকে শুধুমাত্র টিউশন ফি ছাড়া অন্য কোনো ফি না নিতে কঠোর নির্দেশনা দেয়া হয়।
কিন্তু সরকারের সেই নির্দেশনাকে অমান্য করার অভিযোগ উঠেছে সিলেটের অনেক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। তারা টিউশন ফি’র সাথে টিফিন, পুনঃভর্তি, গ্রন্থাগার, বিজ্ঞানাগার, ম্যাগাজিন ও উন্নয়ন বাবদ বাড়তি ফি নিচ্ছেন। অনেক অভিভাবক অতিরিক্ত ফি নেয়ার সিট নিয়ে সিলেটের ডাক’র বার্তা কক্ষে এসে অভিযোগ করেছেন। এ নিয়ে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের সাথে অভিভাবকদের বাকবিতন্ডা হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। এমন অভিযোগের ভিত্তিতে সাম্প্রতিক সময়ে সিলেটের একটি নামিদামি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অতিরিক্ত টাকা অভিভাবকদের কাছে ফিরিয়েও দিয়েছে। বিশেষ করে করোনার মধ্যে এমন আচরণে অসহায় অনেক অসচ্ছল পরিবার। তারা সন্তানদের কথা ভেবে গণমাধ্যমে নিজেদের নাম পরিচয় গোপন রাখারও অনুরোধ করেছেন।
তবে, এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রমও বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠন। তারা সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ি শুধুমাত্র টিনশন ফি নিচ্ছেন
শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে। তারা বলছেন, সরকার মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের আওতাধীন বেসরকারি মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো (এমপিওভুক্ত ও এমপিওবিহীন) শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে শুধু টিউশন ফি নিতে পারবে। কোনো প্রতিষ্ঠান নিয়ে থাকলে তা ফেরত দিতে হবে। ফেরত না দিলে তা টিউশন ফির সঙ্গে সমন্বয় করতে হবে। একইসঙ্গে করোনা মহামারীর মধ্যে যেসব অভিভাবকের আয় কমে গেছে বা যারা চাকরি হারিয়েছেন, তাদের সন্তানদের টিউশন ফি আদায়ের ক্ষেত্রে ‘বিশেষ বিবেচনার’ আহ্বানের বিষয়টিও উঠে এসেছে সরকারের নির্দেশনায়। সেখানে কোনো শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন যেন কোনো কারণে ব্যাহত না হয় সে বিষয়ে সবাইকে যত্নশীল হবার আহবানও জানানো হয় সরকারি নির্দেশনায়।
এ প্রসঙ্গে যোগাযোগ করা হলে মাধ্যমিক উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) সিলেট অঞ্চলের উপ পরিচালক জাহাঙ্গীর কবীর জানান, ‘এভাবে নেয়ার সুযোগ নেই। যদি কেউ নিয়ে থাকে আমরা যাচাই করে ব্যবস্থা নেবো।’
যোগাযোগ করা হলে মাধ্যমিক উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর সিলেট অঞ্চলের সহকারি পরিচালক অধ্যাপক প্রতাপ চৌধুরী জানান, ‘টিউশন ফি ছাড়া অতিরিক্ত নিলে সেটি হবে বেআইনি। কারণ, সরকার স্পষ্ট করে সবকিছু বলে দিয়েছে। সূত্রঃ দৈনিক বাংলাদেশ ৭১ সংবাদ।
Leave a Reply