রাজশাহী জেলাপ্রতিনিধি:
মুক্তিযোদ্ধাকে পিটিয়ে মুচলেকা আদায়ের ঘটনার রেস কাটেনি। এরই মধ্যে এবার রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের চিকিৎসাধীন এক রোগী লাঞ্ছিত হলেন। ইন্টার্ন চিকিৎসকরা তার কাছ থেকে জোর করে মুচলেকা আদায় করেছে। গতকাল শুক্রবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী এই রোগীর নাম মামুনুর রশীদ রিপন। পেশায় তিনি একজন শিক্ষক। নগরীর বঙ্গবন্ধু কলেজের অর্থনীতি বিভাগের প্রভাষক তিনি। শারীরিক সমস্যা নিয়ে বৃহস্পতিবার রামেক হাসপাতালের চার নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছেন তিনি। আনসার সদস্যদের দিয়ে তাকে পেটানো হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার ভর্তির পর তিনি কোন চিকিৎসা পাননি। একজন নার্সকে বিষয়টি জানিয়েছিলেন। এ কারণে শুক্রবার একজন চিকিৎসক ওয়ার্ডে গেলে তিনি তাকে জানান যে তারও একজন বন্ধু চিকিৎসক। আর এ কথা শুনেই ওই চিকিৎসক ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। তিনি ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ডেকে আনেন। ইন্টার্নরা ডাকেন আনসার সদস্যদের। তারা ওই শিক্ষকের গায়ে হাত তোলেন।
শিক্ষক রিপন জানান, আমি একজন রোগী। সেখানে আমাকেই যদি মারধর করা হয় তাহলে এটা কোন হাসপাতাল? এসব দেখার কী কেউ নেই? তিনি জানান, মারধরের পর উল্টো তার কাছ থেকেই মুচলেকা নেয়া হয়েছে। মুচলেকার কাগজে লেখা ছিল- রিপন চিকিৎসকদের সঙ্গে অশ্লীল ও অসাদাচরণ করেছেন। স্বাক্ষর করতে না চাইলে জোর করে মুচলেকার কাগজে তার টিপসই নেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে তিনি আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণের কথা ভাবছেন বলেও জানান।
হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জামিলুর রহমান ফোন ধরেন না। তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথাও বলেন না। হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. সাইফুল ফেরদৌস বলেন, তিনি বিষয়টি এখনও জানেন না। তিনি এ ব্যাপারে খোঁজখবর নিয়ে দেখবেন বলেও জানান।
উল্লেখ্য, গত ২ সেপ্টেম্বর হাসপাতালে বিনাচিকিৎসায় একজন মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীর মৃত্যু হয়। মুক্তিযোদ্ধার সন্তান এর প্রতিবাদ করেন। এ সময় তাকে পিটিয়ে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। মারধর করা হয় মুক্তিযোদ্ধাকেও। এ নিয়ে আন্দোলনে নামেন রাজশাহীর মুক্তিযোদ্ধারা। মাঠে নামে সামাজিক সংগঠন রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদও। পরে ওই মুক্তিযোদ্ধা তিন দুই ইন্টার্ন চিকিৎসকসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এরপর জেলা প্রশাসক উভয়পক্ষের মিমাংসা করে দেন।
Leave a Reply