রাজশাহী প্রতিনিধি
বাগমারায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। বন্যার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় শনিবার সকালে সোনাডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স ভবন ও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ আরও ২০টি গ্রাম নতুনভাবে বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে।
বন্যায় উপজেলার ১১টি ইউনিয়নসহ ভবানীগঞ্জ পৌর এলাকার লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন বলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শরিফ আহম্মেদ জানিয়েছেন।
এলাকায় গিয়ে জানা যায়, এবারে বর্ষার শুরুতে গত দু’দফায় টানা বর্ষণে উপজেলার নদ-নদী, খাল-বিল ও পুকুর পরিপূর্ণ হয়ে যায়। এছাড়া টানা বর্ষণের সাথে উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানির চাপে শনিবার সকালে সোনাডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স ভবন ও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ আরও ২০টি গ্রাম নতুনভাবে বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে।
এছাড়া উপজেলা ভবানীগঞ্জ পৌর এলাকাসহ সোনাডাঙ্গা, গোবিন্দপাড়া, নরদাশ, বাসুপাড়া, মাড়িয়া, হামিরকুৎসা, যোগীপাড়া, কাচারী কোয়ালীপাড়া, দ্বীপপুর, বড়বিহানালী ও ঝিকরা ইউনিয়নের আরও বিভিন্ন গ্রামে নতুনভাবে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
গ্রামের চারদিকে বন্যার পানিতে ডুবে যাওয়ায় এবং বাড়িঘরের মধ্যে পানি প্রবেশ করায় ওইসব গ্রামের লোকজন বাড়ি থেকে বের হতে পারছেনা। এ অবস্থায় উপজেলার বন্যা কবলিত এলাকার প্রায় লক্ষাধিক মানুষ এখন পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন। আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছেন বন্যা কবলিত এলাকার শত শত পরিবার।
ডুবে গেছে বিভিন্ন সড়ক। বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। পানিতে তলিয়ে গেছে শত শত পানবরজ, রোপা, আমন ও আউশ ধানসহ বিভিন্ন ধরনের সবজি জাতীয় ফসল। ভেঙে পড়ছে শতাধিক কাঁচা ঘরবাড়ি। ভেসে গেছে শতশত পুকুরের চাষকৃত মাছ। বন্যার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় আরও বিভিন্ন গ্রাম নতুনভাবে বন্যা কবলিত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এতে ওই সব গ্রামের লোকজনের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
বাগমারা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাজিবুর রহমান বলেন, দু’দফা বন্যায় এ উপজেলায় কৃষি খাতে এ পর্যন্ত প্রায় ৩১ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। তবে বন্যার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় কৃষি খাতে ক্ষতির পরিমাণ বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা শাহাদত হোসেন জানান, বন্যায় মৎস্য খাতে কি পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তার তালিকা তৈরির কাজ চলছে।
বাগমারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার শরিফ আহম্মেদ বলেন, উপজেলা সদর ভবানীগঞ্জ পৌরসভাসহ ১১টি ইউনিয়নের বন্যা কবলিতদের মাঝে এ পর্যন্ত মোট ২৫ টন চাল বিতরণ করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আরও বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। পাওয়া গেলেই তা ক্ষতিগ্রস্থদের কাছে দ্রুত পৌঁছে দেয়া হবে। ক্ষতিগ্রস্থ ও আশ্রয়হীন পরিবারগুলোর পুনর্বাসনের জন্য দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনেরও আশ্বাস দেন তিনি।
Leave a Reply