মোঃ সিরাজুল হক রাজু স্টাফ রিপোর্টার।
বরিশাল-২ আসনের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. শাহে আলম বানারীপাড়ায় ১৭ বার কারাবরণকারী বিট্রিশ বিরোধী আন্দোলনের পুরোধা কুমুদ বিহারী গুহঠাকুরতার সমাধী স্থলে আধুনিক ‘স্মৃতি স্তম্ভ’ নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছেন।
বানারীপাড়া পৌর শহরের প্রাণকেন্দ্রে কুমুদার সম্পত্তিতে প্রতিষ্ঠিত ‘পাবলিক লাইব্রেরী’ সংলগ্ন তাঁর ‘সমাধী’ স্থলে ‘স্মৃতি স্তম্ভ’ নির্মাণের জন্য ইতোমধ্যে তিনি উপজেলা প্রকৌশলী হুমায়ুন কবিরকে নকশা প্রণয়নের দায়িত্ব দিয়েছেন।
১৪ অক্টোবর বুধবার সন্ধ্যায় সংসদ সদস্য মো. শাহে আলম কুমুদা’র সমাধী পরিদর্শনে গিয়ে অবহেলিত ও জরাজীর্ণ রূপ দেখে আধুনিক স্মৃতি স্তম্ভ নির্মাণের এ উদ্যোগ গ্রহণ করেন।
এদিকে সর্বজন শ্রদ্ধেয় চির কুমার মহান এ নেতার সমাধী স্থলে ‘স্মৃতি স্ত¤’¢ নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়ায় সাধুবাদ জানানোর পাশাপাশি উন্নয়নের রূপকার সংসদ সদস্য মো. শাহে আলমকে উষ্ণ অভিনন্দন ও ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক ও বানারীপাড়া পৌরসভার মেয়র অ্যাডভোকেট সুভাষ চন্দ্র শীল,বানারীপাড়া উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাবেক সভাপতি ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি সুব্রত লাল কুন্ডু,কুমুদা প্রতিষ্ঠিত বানারীপাড়া কেন্দ্রীয় সার্বজনিন মন্দির কমিটি ও উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি দেবাশীষ দাস,সাধারণ সম্পাদক ও পৌর কাউন্সিলর গৌতম সমদ্দার,উপজেলা সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের আহবায়ক ওয়াহীদুজ্জামান দুলাল,হাই কেয়ার স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক আ.হাই বখ্শ,বানারীপাড়া প্রেসক্লাব সভাপতি রাহাদ সুমন,সাধারণ সম্পাদক সুজন মোল্লা,নতুনমুখ সাহিত্য সংস্কৃতি পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. শাহজাহান,পৌর আওয়ামী লীগের ক্রীড়া সম্পাদক রিপন বনিক,উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জাহিদ হোসেন,কেন্দ্রীয় সার্বজনিন মন্দির কমিটির সহ-সম্পাদক দেব কুমার সরকার,সদস্য পান্না লাল কর্মকার,পৌর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি সুমম রায় সুমন,সম্পাদক প্রসেনজিৎ বড়াল,পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি রুহুল আমিন রাসেল মাল,সাধারণ সম্পাদক সজল চৌধুরী,শিক্ষক হায়দার আলী প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, বিল্পবী কুমুদ বিহারী গুহ ঠাকুরতা ১৯০৪ সালের ৮ ডিসেম্বর বানারীপাড়ায় উপজেলা সদরের তমাল তলায় ( বর্তমান পৌর শহরের ৩ নং ওয়ার্ড) নিজ পিত্রালয়ে জন্ম গ্রহন করেন । তার পিতা ছিলেন শরৎ গুহ ঠাকুরতা ও মাতা ছিলেন ভুবন মহীনি দেবী। তাদের চার ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে কুমুদা ছিলেন সর্বকনিষ্ঠ। তিঁনি বিট্রিশ সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে কথা বলতেন।
বিট্রিশদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে গিয়ে ১৭ বার করান্তরীণ হয়েছেন। আন্দোলন করতে গিয়ে বিয়ে করা হয়নি তাঁর। প্রতিজ্ঞা করেছিলেন যতক্ষণ পর্যন্ত দেশ (অর্থাৎ বর্তমান ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ) স্বাধীন না হবে ততদিনে তিঁনি বিয়ে করবেন না। ১৯৪৭ সালে দেশ স্বাধীন হলো ঠিকই কিন্তু ওই সময়ে বয়স পেরিয়ে যাওয়ায় আর বিয়ে করা হয়নি তাঁর। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর তাঁর পরিবার পূর্ব পাকিস্তান ছেড়ে ভারতে চলে যায়।
কিন্তু তিঁনি দেশ মাতৃকার টানে পূর্ব পাকিস্তানে থেকে যান। দেশে থেকে যাওয়ার সুবাদে পাকিস্তানের অত্যাচার শোষণ ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে সর্বদা সরব থাকতেন তিনি। পাকিস্তান বিরোধী আন্দোলন করায় তাকে ৮ বার এবং বিট্রিশ বিরোধী আন্দোলনে ১৭ বারসহ মোট ২৫ বার কারাবরণ করতে হয়।
দুটো স্বাধীনতা আন্দোলনে অংশ গ্রহন করা বিল্পবী কুমুদ বিহারী গুহ ঠাকুরতা বানারীপাড়ায় প্রতিষ্ঠা করেছিলেন বিভিন্ন শিক্ষা, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। ১৩৮১ সালের ১৪ বৈশাখ আজীবন বিপ্লবী এ নেতার মহাপ্রয়াণ ঘটে। আর তার কোন বংশধর না থাকায় জন্মবাড়ি ও সমাধী এখন শেষ স্মৃতি চিহ্ন
Leave a Reply