আবু ইউসুফ নিজস্ব নিউজ রুম।
পূর্ণিমা ও শেখ উজ্জ্বল। একই মায়ের গর্ভে জন্ম না হলেও এই বাংলা মায়ের অাদর স্নেহে বেড়ে উঠছিলেন প্রকৃতির নিয়মেই। দুজনের অমিল খুজে না পাওয়া গেলেও মিল প্রতিটি ক্ষেত্রে পাওয়া গেছে। দারিদ্র্যের সাথে যুদ্ধো করতে দেখেছেন দুজনেই তাদের অবিভাবকদের। তাই তাদের দুজনের চাওয়া পাওয়ার অাকাংখাও ছিল কম। তবে ছিল সুখ ও অানন্দে ভরা তাদের জীবন।
স্বপ্ন ছিল অনেক বড়, নানান রঙে অাকা। ধর্ম সম্পর্কে জানতো না কিছুই। লেখাপড়া শিখে দেশ ও দশের কল্যাণে কাজ করার স্বপ্নে বিভোর থাকতো তারা। খালে বিলে মাঠে ঘাটে কাদা মাটিতে জড়াজড়ি করে এগিয়ে যাচ্ছিল তাদের স্বপ্ন ।
কিন্তু হঠাৎ করে মহান স্বাধীনতার বিরোধী পক্ষ বিএনপি জামাত জোট ক্ষমতা দখল করে সারাদেশে মহা তান্ডবলীলা শুরু করে দেয়। শত শত নিরিহ অাওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও সংখালঘু সম্প্রদায়ের মানুষজন হত্যা করে। লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, দেশত্যাগে বাধ্য করাসহ সেই ৭১ এর নৃশংসতা পুনরায় মনে করিয়ে দেয়। পূর্ণিমার গায়ে একে দেয় কলংকের কালো কালি। মাত্র ১২ /১৩ বছরের কিশোরী পূর্ণিমাকে ১২/১৩ জন বিএনপি জামাত সন্ত্রাসীরা পালাক্রমে ধর্ষণ করে মৃত ভেবে বাড়ীর পাশে ফেলে যায়।
অন্যদিকে একই সময়ে ঢাকা কলেজের
সদ্য সাবেক মেধাবী ছাত্রনেতা, অনার্স, মাস্টার্স শেষ করে শেখ উজ্জ্বল বিসিএস পিলি পরিক্ষা দিতে ঢাকা টিসার্স ট্রেনিং কলেজে নিজ অাসনে বসে প্রশ্নপত্রের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। শিক্ষকগন প্রশ্নপত্র বিতরন শুরু করেছেন সেই মুহূর্তে নিউ মার্কেট ও ঢাকা কলেজের ৩০ /৪০ জন হকিষ্টিক, রামদা, ক্রিকেট ব্যাড নিয়ে মেধাবী ছাত্রনেতা শেখ উজ্জ্বলকে পরিক্ষার হল থেকে টেনে হেছড়ে বের করার চেষ্টা করে উপস্থিত শিক্ষক ও পুলিশের হস্তক্ষেপে ব্যার্থ হয়ে কিল ঘুসি, হকিস্টিক দিয়ে উপর্যপুরি অাঘাতের পর অাঘাত করতে থাকে। শেখ উজ্জ্বল জ্ঞান হারানোর পর পুলিশের বিশেষ টিম তাকে ঢাকা মেডিকেলের ইমারর্জেন্সিতে ফেলে চলে যায়।
জীবনের সব স্বপ্ন দুঃস্বপ্নে পরিনত হওয়ার পর পূর্ণিমা ও শেখ উজ্জ্বল বারবার অাত্মহত্যার পথ থেকে ফিরে অাসে প্রতিশোধ নেয়ার লক্ষ্যে। তারা নিজ নিজ প্লাটফর্ম থেকে শপথ নেয় বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিএনপি জামাত সরকারের দুঃশাসন ধ্বংস করে গণতন্ত্র ফিরিয়ে না অানা পযন্ত রাজপথে অান্দোলন সংগ্রামের জন্য জীবন যৌবন সবই বিসর্জন দেবো। পূর্ণিমা ও শেখ উজ্জ্বল ঠিকই কথা রেখেছেন, জীবন যৌবন বিষর্জন দিয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছেন। বিন্দু পরিমান অবহেলা করেননি।
বিগত ১০ বছর পেরিয়ে ১১ বছর শেষের পথে জননেত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্র পরিচালনা করছেন। ব্যার্থ দরিদ্র দেশ অাজ উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে পরিনত হয়েছে। উন্নয়নের রোল মডেল হিসাবে বাংলাদেশকে চিনেছে বিশ্ববাসী শুধুমাত্র বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার দুর দশি নেতৃত্বের কারণে। উন্নয়নে পাল্টে গেছে দেশের চিত্র। রংপুরের মঙ্গা, দিনাজপুরের দুর্ভিক্ষ, বিশ্বে দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ান শব্দগুলো এখন শোনা যায় না। ভুলে গেছে সবই, ভুলে গেছে সেই পূর্ণিমা, মহিমা বা শেখ উজ্জ্বল এর উপর নৃশংসতার ঘটনা। পূর্ণিমা ও শেখ উজ্জ্বল দুজনেই বেঁচে অাছেন, শুধু বেচে নেই তাদের স্বপ্নগুলো।
গত ১০ বছরে অাওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ, জাতীয় নেতৃবৃন্দের করুণা, চরম অবহেলা, লাঞ্চনা, বঞ্চনার তীক্ষ্ণ দৃষ্টি তে মৃত্যুর কোলে ডুলে পড়েছে পূর্ণিমা ও শেখ উজ্জ্বল এর স্বপ্ন গুলো।
হয়ত জানেন না, বা মোসতাকের দলেরা বলেননি বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনাকে উজ্জ্বল পূর্ণিমার নিভে যাওয়ার গল্পটি। তিনি বিশ্বমানবতার জননী, অসহায় উজ্জ্বল পূর্ণিমার শেষ অাশ্রয়। তিনি জানলে করুণা, লাঞ্চনা, বঞ্চনা ও অবহেলা করতে পারতো না অাওয়ামী লীগের জাতীয় নেতৃবৃন্দ । তাদের অাত্মত্যাগ বা অাত্মবিষর্জনের যথাযথ মূল্যায়ন করতেন জননেত্রী শেখ হাসিনা। নিভে যেতে দিতেন না বিবেক, বিবেচনা, দয়া,মায়া, দান প্রতিদানের ইতিহাস।
লেখকঃ আবু ইউসুফ দৈনিক বাংলাদেশ ৭১ সংবাদ এর প্রধান সম্পাদক ধন্যবাদ সবাই কে লাইক ও শেয়ার দিবেন আমি আশাবাদী সবার কাছে
Leave a Reply