আবু ইউসুফ বিশেষ প্রতিনিধি দৈনিক বাংলাদেশ ৭১ সংবাদ।নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে ত্রিভুজ প্রেমের জের ধরে বোনের হাতে পাপিয়া খুন হয়েছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
নারায়ণগঞ্জ জেলা পিবিআইয়ের তদন্তে ঘটনার ছয় মাস পর ওই হত্যা রহস্য উদ্ঘাটিত হয়েছে। রবিবার দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকায় নারায়ণগঞ্জ পিবিআই কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পিবিআই পুলিশ সুপার মনিরুল ইসলাম।
পিবিআই জানায়, আড়াইহাজার থানা-পুলিশ চলতি বছরের ২৮ মে অজ্ঞাত নামা এক নারীর লাশ উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় আড়াইহাজার থানায় মামলা হয়। এ সময় পিবিআই নারায়ণগঞ্জ জেলার ক্রাইমসিন টিম অজ্ঞাতনামা নারীর লাশের আঙুলের ছাপ থেকে ভিকটিমের নাম পরিচয় উদ্ঘাটন করে জানতে পারে যে মৃত নারীর নাম পাপিয়া বেগম। সে সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরের হলদিপুর গ্রামের জয়নাল মিয়ার মেয়ে। এ ঘটনায় জয়নালকে গ্রেপ্তারও করা হয়।
কিন্তু এতেও ঘটনার কোন কুল কিনারা করতে না পারায় পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের নির্দেশে মামলাটির তদন্ত পিবিআই, নারায়ণগঞ্জ জেলাকে দেয়া হয়। পিবিআই গত ২৩ জুলাই এসআই মো. তৌহিদুল ইসলামকে তদন্ত কর্মকর্তা নিযুক্ত করে। তদন্তের একপর্যায়ে গত মঙ্গলবার ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে মো. আরিফুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়। আরিফুল বিজ্ঞ আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করেন।
জবানবন্দিতে জানা যায়, আরিফুলের সাথে পাপিয়ার প্রেমের সম্পর্ক ছিল।
কিন্তু এই সম্পর্ক তার বোন শাম্মি মেনে নিতে পারেনি। শাম্মি আরিফুলকে ভালোবাসত। বিষয়টি পাপিয়া জানতে পারলে দুজনের মধ্যে ঝগড়া শুরু হয়।
ঘটনার দিন আরিফুল, পাপিয়া এবং তার বোন শাম্মি সিদ্ধিরগঞ্জের নয়াআটির বাসায় অবস্থান করছিল। দুজনের ঝগড়ার কারণে আরিফুল তার পরিচিত একই বিল্ডিং এর ২য় তলায় জনৈক সামিয়ার বাসায় চলে যায়। কিছুক্ষণ পর আরিফুল আবার পাপিয়ার ঘরে এসে তার লাশ ঘরের বিছানার ওপর পড়ে থাকতে দেখতে পায়। এ সময় পাপিয়ার গলায় ওড়না প্যাঁচানো ছিল এবং শাম্মি ঘর থেকে বের হয়ে পালানোর চেষ্টা করছিল।
পরে তারা একজন স্থানীয় ডাক্তারকে ডেকে এনে জানতে পারে পাপিয়া মারা গেছে। শাম্মির মাধ্যমে তার বাবা জয়নাল পাপিয়ার মৃত্যুর খবর জানতে পেরে ঘটনাস্থলে আসে।
পরে ভিকটিমের পিতা জয়নালের পরিকল্পনায় আরিফুল, জয়নালের ছেলে মামুন এবং শাম্মি মিলে পাপিয়ার লাশ ভৈরব ব্রিজ থেকে নদীতে ফেলে দেওয়ার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনামতো তারা সবাই মিলে একটি অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে মৃত পাপিয়াকে নিয়ে রওনা হয়। কিন্তু পথিমধ্যে পুলিশের চেক পোস্ট থাকায় তারা আড়াইহাজার থানার শিমুলতলায় রাস্তার পাশে জঙ্গলের ভেতরে পাপিয়ার লাশ ফেলে দিয়ে চলে যায়।
গ্রেপ্তারকৃত পাপিয়ার পিতা জয়নাল মিয়াকে দুই দিনের পুলিশ রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তৌহিদুল ইসলাম জানান, মামলার অপরাপর আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। সূত্রঃ দৈনিক বাংলাদেশ ৭১ সংবাদ।
Leave a Reply