রাজশাহী প্রতিনিধি
দেশের বিভিন্ন স্থানে ধর্ষণ ও নারীর প্রতি সহিংসতার প্রতিবাদে রাজশাহীতে কর্মসূচি পালন করেছে বিভিন্ন সংগঠন। তারা এ ব্যাপারে সরকারের কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানিয়েছে। তা না হলে সংগঠনগুলো কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ারও ঘোষণা দিয়েছে।
শনিবার সকালে নগরীর সাহেববাজার জিরোপয়েন্টে পঞ্চম দিনের মতো গণস্বাক্ষর ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। রোববার সকালে নগরীর বিন্দুর মোড় থেকে সাইকেল র্যালি করবে তারা। শনিবার গণস্বাক্ষর কর্মসূচিতে ধর্ষণের সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ডের পক্ষে স্বাক্ষর করেন নারী মুক্তি সংসদের জেলা শাখার সভাপতি নারীনেত্রী তসলিমা খাতুন।
শিক্ষার্থীদের এই মানববন্ধনে ছাত্রনেতা তামিম সিরাজী, আল রশিদ রাহী, মন্দিরা ঘোষসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন। একই দাবি নিয়ে সকালে মানববন্ধন-সমাবেশ করে নারী মুক্তি সংসদের জেলা শাখা।
ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবিতে রাজশাহী মহানগরীর সাহেববাজার জিরোপয়েন্টে এই মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির রাজশাহী মহানগরের সাধারণ সম্পাদক দেবাশিষ প্রমানিক দেবু। সভাপতিত্ব করেন নারী মুক্তি সংসদের জেলা শাখার সভাপতি তসলিমা খাতুন। তারা দেশজুড়ে ধর্ষণের ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরেন।
দেবাশিষ প্রামানিক দেবু বলেন, সারাদেশে ধর্ষণের ঘটনা অনেক বেশি বেড়ে গেছে। কোন জায়গা আর নারীদের জন্য নিরাপদ নয়। তিনি বলেন, ধর্ষকদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হলে সরকারকে কড়া পদক্ষেপ নিতে হবে। কিন্তু অনেক সময় আমরা সেটা দেখছি না। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, দেশে জনসংখ্যা বেড়ে যাবার কারণে ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে। এই বক্তব্য অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক। সরকারের দায়িত্বশীল মন্ত্রী যদি এই ধরণের বক্তব্য দেন তাহলে ধর্ষকেরা আরও উৎসাহিত হবে।
মানববন্ধনে নারীনেত্রী তসলিমা খাতুন বলেন, পোশাক কখনও ধর্ষণের কারণ হতে পারে না। পোশাকই যদি মূল বিষয় হতো তাহলে ৫ বছরের শিশুরা ধর্ষণের শিকার হতো না। সারাদেশে অসংখ্য ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে। কিন্তু ধর্ষকেরা শাস্তি পাচ্ছে না। ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত নারী মুক্তি সংসদ মাঠে থাকবে।
মানববন্ধন সঞ্চালনা করেন মহানগর ওয়ার্কার্স পার্টির সম্পাদকমণ্ডলির সদস্য নাজমুল করিম অপু। সংহতি প্রকাশ করে আরও বক্তব্য দেন- মহানগর যুবমৈত্রীর সভাপতি মনিরুজ্জামান মনি, মহিলা পরিষদের জেলার সাধারণ সম্পাদক অঞ্জনা সরকার প্রমুখ। কর্মসূচিতে নারী মুক্তি সংসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শারমীন আক্তার, আসমা বেগমসহ আরও অনেক নারী অংশ নেন।
কর্মসূচি পালন করে নারী ও শিশু অধিকার ফোরাম নামে আরও একটি সংগঠন। এতে রাজশাহীর সাবেক সিটি মেয়র মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল বক্তব্য রাখেন।
এর আগে শুক্রবার বিকালে সারাদেশে প্রতিবাদ কর্মসূচির অংশ হিসেবে প্রতিবাদী সাংস্কৃতিক সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী রাজশাহী জেলা সংসদ। নগরীর আলুপট্টি বঙ্গবন্ধু চত্বরে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে উদীচীর জেলা সংসদের সভাপতি অধ্যক্ষ জুলফিকার আহমেদ গোলাপ সভাপতিত্ব করেন।
সাধারণ সম্পাদক অজিত কুমার মন্ডলের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন- মুক্তিযোদ্ধা কলামিস্ট প্রশান্ত কুমার সাহা, শিক্ষকনেতা অধ্যক্ষ রাজকুমার সরকার, মুক্তিযোদ্ধা শাজাহান আলী বরজাহান, নারীনেত্রী সেলিনা বানুম আদিবাসি ছাত্রনেতা প্রশান্ত মিনজ প্রমুখ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ব্রজেন্দ্রনাথ প্রামানিক, শাহিনুর রহমান সোনা, বিধান চন্দ্র সরকার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
Leave a Reply