মোঃ সাদ্দাম হোসাইন সোহান, ফরিদপুর ঃ ফরিদপুর বোয়ালমারীর ডোবরা-আল-গফুরিয়া ইসলামিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানায় সরকারের বরাদ্দকৃত এতিম শিশুদের জন্য ক্যাপিটেশন গ্রান্ড ফান্ডের অর্থ আত্মসাত, দূনীর্তি ও অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ডোবরা দরবার শরীফের এতিমখানায় এতিমদের ভুয়া তালিকা করে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন প্রতিষ্ঠানটির প্রিন্সিপাল ও এতিমখানা পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক শাহ্ মুহাম্মদ খালিদ-বিন-নাসের।
উপজেলা সমাজসেবা কার্যলয় সুত্রে জানা যায়, ডোবরা-আল-গফুরিয়া ইসলামিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানাটি সরকারিভাবে নিবন্ধিত। প্রতিষ্ঠানটি ২০১৮/১৯ অর্থ বছরে ৪৩জন এতিমের নামে দুই কিস্তিতে ৫লক্ষ ১৬ হাজার টাকা উত্তোলন করেছে।
অভিযোগের ভিত্তিতে অনুসন্ধান করে দেখা যায়, ৪৩ জন এতিম শিশুর মধ্যে ২৬জনের পিতা-মাতা জীবিত রয়েছে। তালিকা ভুক্ত একাধিক শিশুর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাদের পিতা-মাতা জীবিত। অনেকে জানেনা এতিমখানার আবেদনে এতিমদের তালিকায় তাদের পিতা-মাতাকে মৃত দেখানো হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় বেশ তোলপাড় শুরু হয়েছে।গত ২৯ আগস্ট জেলা সমাজসেবা দপ্তরের উপ-পরিচালক, ফরিদপুর বরাবর মো. আমীর হোসেন গরীবসহ ৯জন একটি অভিযোগ পত্র দাখিল করেণ।
আমীর হোসেন বলেন, ৪৩জন সুবিধাপ্রাপ্ত এতিমের মধ্যে ২৬জনের পিতা-মাতা জীবিত, যা প্রমানপত্রসহ জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরে অভিযোগ দাখিল করি। সম্প্রতি জানতে পারলাম জেলা সমাজসেবা অফিস থেকে উপজেলা সমাজসেবা অফিসকে বিষয়টি তদন্তের ভার দেওয়া হয়েছে। এতিমদের অর্থ আত্মসাতের সঙ্গে উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা কর্মচারী জড়িত রয়েছে, তাদের দিয়ে তদন্ত করা হলে সুষ্টু তদন্ত হবে বলে আমরা মনে করি না।তালিকা অনুযায়ি ৪১ নম্বর ডোবরা গ্রামের তাসলিম শেখের দাদা ছীরু শেখ বলেন, আমার ছেলে রবিউল শেখ ও পুত্রবধু রূপালী বেগম জীবিত রয়েছে। আমার নাতিকে মাদ্রাসায় পড়তে পাঠিয়েছি তাকে এতিম দেখিয়ে যারা সরকারি অর্থ আত্মসাত করেছে তাদের কঠোর শাস্তি দাবি করি।
এ বিষয়ে এতিমখানার মেয়াদ উত্তীর্ণ পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. নূর ইসলাম মোল্যার নিকট জানতে চাইলে তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান ও অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন।
এতিমখানা ও মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল শাহ্ মুহাম্মদ খালিদ-বিন-নাসের অর্থ আত্মসাতের বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে বলেন, এটি একটি ভুল, নতুন সংশোধিত তালিকা সমাজ সেবা অফিসে জমা দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, আমি কোন প্রকার দূনীর্তি বা অর্থ আত্মসাত করিনি। এ বিষয়ে আপনারা লিখে কিছু করতে পারলে করুন। আমি এসব পরোয়া করি না।
বোয়ালমারী উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা প্রকাশ কুমার বিশ্বাস বলেন, আমি জানতে পেরেছি এতিমখানাটি ভুয়া নাম-তালিকা দিয়ে অর্থ বরাদ্দ নিয়েছে, এ বিষয়ে জেলা সমাজ সেবা কার্যলয় থেকে তদন্ত করার জন্য একটি চিঠি পেয়েছি। অচিরেই এ বিষয়ে সরেজমিনে তদন্ত করা হবে।
সাতৈর ইউপি চেয়ারম্যান মুহাম্মদ মুজিবুর রহমান বলেন, এলাকাবাসী সূত্রে বিষয়টি আমি জানতে পেরেছি। যা ডোবরা দরবার শরীফের সম্মানকে ক্ষুন্ন করেছে। আমি আশা করি যথাযথ কর্তৃপক্ষ তদন্ত পুর্বক এতিমদের অর্থ আত্মাসাতের বিষয় প্রমাণিত হলে দোষিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
এ ঘটনার বিষয়ে ডোবরা-আল-গফুরিয়া ইসলামিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানায় সরকারের বরাদ্দকৃত এতিম শিশুদের জন্য ক্যাপিটেশন গ্রান্ড ফান্ডের অর্থ আত্মসাত, দূনীর্তি ও অনিয়মের অভিযোগে ১১ অক্টোবর , রবিবার পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছে। কোটে প্রেরণ করলে আদালত মামলার চলমান প্রক্রীয়ায় কারাগারে পাঠিয়ে দেয়।
Leave a Reply