কুষ্টিয়ার খোকসার গোপগ্রাম ইউনিয়নের সন্তোষপুর গ্রামে স্ত্রীকে নির্যাতনের কারনে মামলায় আটক লম্পট স্বামী জামিনে মুক্তি পেয়ে বাড়িতে ফিরে স্ত্রীর শেষ সম্বল পাওয়ারলুম মেশিন বিক্রি এবং স্ত্রী ও সন্তানদের তাদের সম্পদ থেকে বঞ্চিত করার পাঁয়তারা করছে বলে জানা গেছে। ভুক্তভোগী ফিরোজা খাতুন জানান, প্রায় ৩০ বছর পূর্বে মৃত বাহাউদ্দীন মোল্লার ছেলে মো. জুলফিকার আলির সাথে তার বিয়ে হয়। জুলফিকার হুজুর মেহেরপুর গাংনী সিদ্দিকীয়া আলিয়া মাদ্রাসার ভাইস প্রিন্সিপাল পদে চাকরী করতেন এবং পাশাপাশি গাংনী উপজেলা মসজিদে ইমামতি করতেন। কিন্তু তাদের বৈবাহিক জীবন কখনোই সুখের ছিলোনা তার স্বামী বিভিন্ন ভাবে তাকে লাঞ্ছনা গঞ্জনা এবং শারীরিকভাবে নির্যাতন করতেন। সাত বছর পূর্বে তার স্বামী মেরে তার হাত ভেঙ্গে দিলে মসজিদের ইমামের চাকরী চলে যায়।তাদের চারটি সন্তান বহু কষ্টে তিনি মানুষ করেন। গত বছর তার স্বামী অবসর গ্রহণ করায় বর্তমানে তারা গ্রামের বাড়ি সন্তোষপুর বসবাস করছেন। গত ১৯ ডিসেম্বর তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে জুলফিকার হুজুরের নির্দেশে তার ভাই আল মামুন পেয়ারা ও পেয়ারার দুই ছেলে তুহিন মোল্লা ও মো. ফারুক মোল্লা, হান্নান মোল্লার ছেলে সাব্বির মোল্লা ও ইকবাল হোসেনের ছেলে তুহিন তাকে বেধড়ক মারপিট করতে থাকে এসময় তার ছোট ছেলে নাজমুল সাকিব ঠেকাতে গেলে তাকেও মারপিট করে আহত করে। পরবর্তীতে তারা খোকসা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি থেকে সুস্থ হয়ে বাড়িতে আসলে আর ঢুকতে দেয়া হয়নি। তার স্বামী ও দেবর এবং ভাতিজারা তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেন। পরবর্তীতে তিনি খোকসা থানায় উল্লেখিত ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা করেন। মামলা নং ১১ তাং ২১.১২.২০২০। ফিরোজা খাতুন আরো বলেন, তার স্বামী মামলা থেকে জামিনে মুক্তি পেয়ে এসে তার বহু কষ্টে প্রায় ২ লাখ টাকায় কেনা পাওয়ারলুম মেশিনের একটি বিক্রি করে দেয়। এ ব্যাপারে তিনি থানায় অভিযোগ দিয়েছেন।জুলফিকার হুজুর স্ত্রীকে মারপিট ও পাওয়ারলুম মেশিন বিক্রির বিষয়ে বলেন, তিনি তার স্ত্রীকে চড় মেরেছেন এবং ঘরের টিনে লেগে তার স্ত্রীর হাত কেটে গেছে বলে জানান। ছোট ছেলেকে মারপিটের বিষয়ে বলেন ছোটছেলে তাকে মারতে গেলে তার ভাতিজারা ঠেকিয়ে দেয় কোন মারপিট করা হয়নি। পাওয়ারলুম মেশিনের বিষয়ে জানায় আমার মেশিন আমি বিক্রি করেছি। তার স্ত্রী বহু কষ্টে জমানো অর্থে মেশিন ক্রয় করেছে উত্তরে বলেন সে কোথায় টাকা পেয়েছে? এ ব্যাপারে পাওয়ারলুম মেশিন বিক্রেতা আসলাম জানান, ২ বছর পূর্বে জুলফিকার হুজুরের স্ত্রী তার নিকট থেকে প্রায় ২ লাখ টাকা দিয়ে ২ টি পাওয়ারলুম মেশিন ক্রয় করে। এখনো সে ৪ হাজার টাকা ফিরোজা খাতুনের কাছে পাবে। ক্রয় করার সময় কোন মেমো দিয়েছে কিনা জিজ্ঞেস করলে জানান পুরাতন মেশিনের কোন মেমো দেয়া হয়না। এ ব্যাপারে খোকসা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন, স্বামী স্ত্রীর মধ্যে বিরোধে স্ত্রী মামলা করায় আসামি গ্রেফতার করা হয়। বর্তমানে তারা জামিনে মুক্তি পেয়েছে। এবং পাওয়ারলুম মেশিন কে ক্রয় করেছে বিষয়টি বের করতে আমরা কাজ করছি। জিকু নামের একজন ক্রয় করেছে বিষয়টি আমাদের জানা আছে। তবে কয়েক দিনের মধ্যে প্রকৃত মালিককে মেশিন বুঝিয়ে দেয়া হবে।
Leave a Reply