======================
মাঈনউদ্দীন মিন্টু নোয়াখালী জেলা প্রতিনিধীঃ
ব্যারিষ্টার মওদুদ আহমেদ একটি নাম, একটি ইতিহাস, রাষ্ট্র পরিচালনার দক্ষ কারিগর। কোম্পানিগঞ্জের গর্বিত কৃতিসন্তান। সুদীর্ঘ ৫০ বছর ধরে কোম্পানিগঞ্জ বাসীকে অনেক দিয়েছেন। এই জনপদের মানুষ ধন্য, কাদের আর মওদুদের জন্য। এরপরও রাজনীতির আদুভাই মানষিকতায় নতুন নেতৃত্বের বিকাশ ঘটবেনা।
আজ বিএনপির রাজনীতি বিভক্তির মুলে কিছুটা ক্ষোভ, দূঃখ আর মান অভিমানের ফলশ্রুতি। ঢাকায় অবস্থানরত দের অন্যতম স্নেহ মমতায় পরিপূর্ণ ছিলো মওদুদ ফখরুল। অফিস টাইমে বা রাতের নির্জনতা কেটেছে টেলি আলাপে। একে অপরের বাসায় আতিথেয়তার ও কমতি ছিলোনা। অনুগত ফখরুল সকল বিষয়ে শেয়ার করতেন। মওদুদ আহমেদের কথা বাচনভঙ্গিতে বুঝা যেতো ফখরুলই তার আগামী সপ্নের লালিত উত্তরাধিকারী। ফখরুল ইসলামের ব্যবসা বানিজ্যের খোঁজ খবর মওদুদের নখদর্পনে।
একজন প্রত্যক্ষ তৃতীয় মাধ্যম হিসেবে এর আদি অন্তের রাজসাক্ষী ছিলাম আমি নিজেই। জনাব মওদূদ বগুড়ায় ইলেকশন করছেন, ফখরুলের অর্থের যোগান চলে যায় সুদুর বগুড়ায়। কোম্পানিগঞ্জের সকল বিষয়ে মওদুদের নির্দেশনা মতোই চলছে। তারই ধারাবাহিকতায় ২০০৯ এর উপজেলায় ফখরুল ইসলাম মওদুদের পছন্দনীয় প্রার্থী। এরপর থেকে তৃনমূল দেখবাল, অভিভাবকত্ব, অার্থীক অনুদান, মামলা খরচ, নেতা কর্মির কমিনিউকেশন মওদুদের প্রতিনিধিত্বের বাস্তবতা।
হঠাৎ সবই উলট পালট হয়ে গেলো সামান্য বিষয়ে। ব্যবসায়ীক কারনে ফখরুল ইসলাম আমেরিকা, লন্ডন, দুবাই, কাতার, সৌদি আরবে তার নিত্য বিচরন। ২০১৪ সালে বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান ওমরায় অবস্থান কালীন জেদ্দা বিএনপির সেক্রেটারি প্রয়াত শহীদুল ইসলাম নান্নু আমার মাধ্যমে প্রস্তাব করেন যেন শিল্পপতি ফখরুল ইসলাম খালেদা তারেকদের সাথে দেখা করেন। তাতে ফখরুল ইসলাম তেমন আগ্রহ দেখান নাই। এক ফাঁকে জানতে চাইলে তিনি বলেন বিএনপিতে যোগ দিলে ঢাকায় সদলবলে আমাদের নেতা মওদুদ আহমেদ সাহেবের উপস্থিতিতেই উত্তম হবে।
ইতিমধ্যে ২০১৬ সালে লন্ডনে তারেক জিয়ার সাথে সাক্ষাতের সুযোগ মিলে যায়। তারেক জিয়া তার দলে কাজ করার জন্য ফখরুল সাহেবকে উৎসাহিত করেন। যেহেতু বেগম জিয়া বা তারেকের সাথে সরাসরি সাক্ষাৎ করার এখন পরিবেশ নেই। লন্ডনের ঐ সাক্ষ্যাতই জনাব ফখরুলের জন্য ছিলো মহেন্দ্রক্ষন। যা যে কেউ হাত ছাড়া করবেনা।
আর এই সংবাদ জানার পরই জনাব মওদূদ আহমেদ চরম বিরাগভাজন হয়ে ফখরুলের দিক থেকে ইউ টার্ন করা শুরু করেন। ফখরুল ইসলাম কোম্পানিগঞ্জের বিএনপি রাজনীতিতে আসার সংবাদ জানার পর স্থানীয় কিছু গদিলোভী মহল তাঁকে প্রতিপক্ষ ভাবতে শুরু করেন। তারা নানান কুটচালে দুই নেতার দূরত্বকে পোক্ত করার মিশনে মরিয়া। তারা বেগম হাছনা মওদুদকেও ক্ষেপিয়ে তোলেন। এই নাটকীয় পরিস্থিতিতে ও জনাব ফখরুল ইসলাম তার কোন আচরনে বক্তৃতা বিবৃতিতে নিজেকে সংযত রেখেই তার নেতা মওদুদ আহমেদ এর প্রশংসার কমতি করছেন না। গেলো সপ্তাহে মওদুদ আহমেদের অসুস্থতার সংবাদ পেয়ে আবুধাবিতে দোয়ার আয়োজন করেন। ফখরুল ইসলাম কখনো নিজেকে মওদুদ আহমেদের সমকক্ষ বা প্রতিপক্ষ মনে করেন না। তিনি হয়ত ভাবেন বয়ঃসন্ধিক্ষনে তিনি মওদুদ আহমেদের পাশে থাকবেন। সাধারণ লোকজন মনে করে দুই নেতার বুঝাপড়ার ভিত্তিতে কোম্পানিগঞ্জে বিএনপির ঘাটি আরো উর্বর হবে। তবে স্থানীয় কিছু অতিউৎসাহী নেতা কর্মির আচরন আরো সংযত হওয়া উচিৎ। এই ব্যপারে মিডিয়াগুলোর গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা থাকা দরকার। গত শনিবারের ফখরুল ইসলামের বাড়ীতে হামলা ও তার পরবর্তী মামলা উভয়ই বিএনপিকেই ক্ষতিগ্রস্থ করবে। এই বিষয়ে ফখরুল সাহেব বলেন সকল জনশক্তিই আমাদের দলের লোক সুতরাং বাড়াবাড়ি কারো জন্য সুফল বয়ে আনবেনা। বর্তমানে জনাব ফখরুল ইসলাম দেশের বাহিরে অবস্থান করছেন।
হাফিজ ছিদ্দিকি ২৭/০৯/২০২০
Leave a Reply