মোঃ আনোয়ার হোসেন, ঝিনাইদহ জেলা প্রতিনিধি-
অগ্রণী ব্যাংক কালিগঞ্জ শাখার ব্যবস্থাপক নাজমুস সাদাতের বিরুদ্ধে ঋন দেওয়ার কথা বলে ঘুষ গ্রহন, গ্রাহক হয়রানিসহ তার চেম্বারকে বিএনপি’র পার্টি অফিস হিসেবে ব্যবহার করার মত গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। এসবই যেন নিয়ম হয়ে দাড়িয়েছে অগ্রনী ব্যাংক কালিগঞ্জ শাখায়। ফলে এখানকার গ্রাহক, ব্যাংক স্টাফ সকলেই ক্ষুদ্ধ । তবে সবকিছুকেই থোরাই কেয়ার করেন অগ্রনী ব্যাংকের এ শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ম্যানেজার নাজমুস সাদাত। নাজমুস সাদাত চলতি বছরের ২২ জুন কালিগঞ্জ শাখায় ব্যবস্থাপক হিসেবে যোগ দেন। এরপর থেকেই ম্যানেজারের এহেন কর্মকান্ডের ফলে গ্রাহক হারাতে বসেছে ব্যাংকের এ শাখাটি।
জানা গেছে, যোগদানের পরপরই তিনি বিধিবহির্ভূত ভাবে একাধিক গ্রাহককে তিনি দুইটা করে শস্য ঋন দেন। মনোহরপুর গ্রামের মোঃ মনিরুল ইসলাম এবং ঈশ্বরবা গ্রামের আইনাল হোসেন তাদের পূর্বের শস্য ঋন পরিশোধ না করলেও তাদেরকে র্অনৈতিক সুবিধার বিনিময়ে নতুনভাবে আরো একটি করে শস্য ঋণ দেন ব্যবস্থাপক নাজমুস সাদাত। আঞ্চলিক কার্যালয় পরিচালিত অডিটে বিষয়টি সামনে আসলে ব্যবস্থাপক নাজমুস সাদাত বিষয়টি ধামাচাপা দিতে অস্হায়ী মাঠ সহকারী আজির আলীর একটি টাকা আটকিয়ে উক্ত ঋন দুটি পরিশোধ করেন।
এছাড়াও ঋন পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে উৎকোচ গ্রহন করার মত অভিযোগও উঠেছে বর্তমান ম্যানেজারের বিরুদ্ধে। মনোহরপুর গ্রামের জাকির হোসেনের কোন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান না থাকলেও ব্যবস্থাপক নাজমুস সাদাত তাকে তিন লক্ষ টাকার এসএমই ঋন দেওয়ার কথা বলে দুই মাস আগে খরচ বাবদ ত্রিশ হাজার টাকা নেন । এ বিষয়ে জাকির আলীর সাথে কথা বললে তিনি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন। আঞ্চলিক কার্যালয় পরিচালিত অডিট চলাকালীন সময়ে গ্রাহকদের হয়রানি করা এবং মিথ্যা তথ্য সরবারহ করে গ্রাহকদের নিকট হতে অসংখ্য সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে তার অধঃস্তন অফিসারকে ফাসানোর মত অভিযোগ উঠেছে।
মনোহরপুর গ্রামের শহিদুল ইসলাম অভিযোগ করেন তার গৃহীত ঋনটি তিনি পরিশোধ করলেও ব্যবস্থাপক তাকে দফায় দফায় অফিসে ডেকে উল্টাপাল্টা কথা বলেন এবং একটি সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেন। ব্যবস্থাপক নাজমুস সাদাতের বিরুদ্ধে তার চেম্বারকে বিএনপি-যুবদলের পার্টি অফিস হিসেবে ব্যবহার করার মত গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।তিনি কালীগঞ্জের মাহতাব উদ্দীন ডিগ্রী কলেজে পড়াকালীন ছাত্রদলের রাজনীতির সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন। কালীগঞ্জ শাখায় যোগদানের পরপরই তার অফিসে বিএনপি-যুবদলের নেতা-কর্মীদের আনাগোনা শুরু হয়। তার কক্ষে বসে তিনি এসব নেতা-কর্মীদের সাথে ঘন্টার পর ঘন্টা আড্ডা দেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা জানান- ব্যবস্থাপকের চেম্বারকে এখন আর ব্যাংকের অংশ বলে মনে হয়না। মনে হয় যেন বিএনপি’র পার্টি অফিস। ম্যানেজার নাজমুস সাদাত লোভী মানুষ। ব্যাংককে নিজের সম্পত্তি মনে করে যা খুশি তাই করছেন ম্যানেজার।শুধুমাত্র বিএনপি করার কারনে কতিপয় প্রতিষ্ঠানকে তিনি বিধিবহির্ভূতভাবে ঋন সুবিধা দিয়েছেন বলে জানা যায়। যুবদল নেতা রানা আহমেদ এর প্রতিষ্ঠান মেসার্স আছিয়া এন্টারপ্রাইজ এর নামে কৃষি ব্যাংকে একটি মেয়াদোত্তীর্ণ সিসি ঋন থাকলেও ব্যবস্থাপক নাজমুস সাদাত শুধুমাত্র যুবদল করার কারনে তার শাখা থেকে উক্ত প্রতিষ্ঠানের নামে তিন লক্ষ টাকার একটি এসএমই ঋন দেন।
অভিযোগের বিষয়ে শাখা ব্যবস্থাপক নাজমুস সাদাতের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান,আমার বিরুদ্ধে দেওয়া তথ্যগুলো সঠিক নয়,মিথ্যা ভিক্তিহীন।আমার মান-সম্মান নষ্ট করার জন্য ব্যাংকের কতিপয় কু-চক্রিমহল সাংবাদিকদের নিকট ভুল তথ্য দিয়ে আমাকে অযথা হয়রানি করার চেষ্টা করছে।
Leave a Reply