জিয়ারত গুরুত্বপূর্ণ একটি সুন্নতি আমল। বিশেষ করে আমাদের অঞ্চলে এই আমল একাবারে ক্ষীণ! (দিরাই উপজেলায়) জিয়ারতের এই নিরবতা ভয়াবহতার শামিল! কারণ এক, মৃত্যুর ভয় অন্তর থেকে উঠে যাওয়া। কারণ দুই, দুনিয়ার প্রতি অত্যাধিক আসক্তি! কারণ তিন, মৃতব্যক্তিদের প্রতি উদাসীনতা ও নেক দুআর অভাব! অথচ এই তিনটি কাজেই জিয়ারতের মধ্যে নিহিত।
সিলেট শহর; বিশেষত শহরতলী গ্রামগুলোতে এই আমলটা বেশ সুন্দরভাবে পালন করে । আমি অনেক মসজিদের মুসল্লীদের দেখেছি জুমাবারে (ছোট বড়) বিরাট একটা অংশ এই জিয়ারতের আমলে পাবন্দি! জুমাবার ছাড়া মুরব্বিদের মাঝেও এই আমলটা খুব চালু।
আমার খুব মায়া লাগে ওই মানুষদের লাগি যাদের জন্য তার আত্মীয়রা দুআ করে। বংশের প্রদীপগুলো দুআর আলো জ্বালিয়ে আমিন বলে। কতই না ভাগ্যবান ওই মা ওই বাবা; যার সন্তান রবের কাছে দুআ করে। জিয়ারতে দাঁড়ায়, বলে আল্লাহ আমার মা বাবাকে তুমি ওইভাবে লালন পালন করো যেভাবে করেছিল আমাদেরকে ছোটবেলায়!
আফসোস লাগে ওই মা বাবার লাগি! যার সন্তানদের দশতলা বাড়ি আছে গাড়ি আছে। অথচ একটু দুআ করার মতো সময় নাই। একটু কাঁদার মতো দু’চোখে পানি নাই। একটু জিয়ারত করার মতো যোগ্যতা নাই। হায়! কী হবে এই বিল্ডিং করে! কি হবে এই সন্তান থেকে; যে তার মা বাবারে জীবদ্দশায় কিছু দিলো না মরার পরেও কিছু দিলো না!
অথচ কত সহজ আমল জিয়ারত। ছোট্ট একটা দুআ করলেই হয়। আসসালামু আলাইকুম ইয়া আহলাহ্ দিয়ার…… হাত তুললেও হয় না তুললেও হয়। দল বেঁধে গেলেও হয় একা গেলেও হয়! কেন জানি মনে হয়, একটু দাঁড়াইলেই যেন জিয়ারত শেষ। দুই মিনিট পাঁচ মিনিটের সময় মাত্র। কিন্তু আমাদের কত উদাসীনতা অল্প সময়ের আমলেও!
লেখক: কবি ও ছড়াকার।
Leave a Reply