বরিশাল জেলা প্রতিনিধি।।
স্বরূপকাঠীতে তৎকালীন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী এ্যাড শ ম রেজাউল করিমের হস্তক্ষেপে স্বামী ও স্বজনদের অত্যাচার হতে রক্ষা পেয়ে সংসার ফিরে পাওয়া রুমানা এখন ১৩ মাসের সন্তানকে নিয়ে আবারো স্বামীর স্বজনদের অত্যাচারে জর্জরিত। সন্তানের জীবনের নিরাপত্ত্বা চেয়ে মোসাঃ রুমানা বেগম বাদী হয়ে তার স্বামীর ১ম স্ত্রী নার্গিস জাহান, মেয়ে ইভা, ইমি, জামাতা রাসেল ও দেবর আঃ কালামকে বিবাদী করে নেছারাবাদ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ সূত্রে জানা যায় সম্প্রতি ৫ সেপ্টম্বর জগন্নাথ কাঠিতে ছেলের নামে লিখে দেয়া বিল্ডিং এর ২য় তলায় এসে বিবাদীরা রুমানার সন্তানকে মেরে ফেলবে বলে ভয়ভীতি প্রদান করে। অভিযোগে রুমানা আরো জানায় তার স্বামীর ১ম ঘরে কোন ছেলে নেই, এমনকি তার দেবরদের ও কোন ছেলে সন্তান না থাকায় রুমানার ছেলে হওয়ায় তারা তার স্বামী আঃ ছালামের সম্পত্ত্বি ভোগ দখলের জন্য তার সন্তানকে মেরে ফেলার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। রুমানা জানান আমার ছেলের নামে জগন্নাথ কাঠির একটি বিল্ডিং লিখে দেবার পর থেকে নির্যাতন ও মারধরের চেষ্টা চলতেছে। অথচ আঃ ছালাম ১ম স্ত্রীর নামে একটি বাড়ি এবং কন্যার নামে আর একটি বাড়ি লিখে দিয়েছে। কান্না জনিত কন্ঠে রুমানা বলেন আমি ও তো ছালামের স্ত্রী। কৈ আমি তো বড় আপা বা আমার ঐ আপার ঘরের মেয়ের নামে বিল্ডিং লিখে দেয়ায় কোন আপত্ত্বি কিংবা হিংসাত্মক আচরন করিনি। তাহলে আমার বেলায় কেন এমন হবে। তাদের অত্যাচারে শেষ পর্যন্ত না হয় আমার সন্তানকে হারাতে হয়। উল্লেখ্য বিয়ের পর থেকেই সংগ্রাম করে যাচ্ছে রুমানা। অবরুদ্ধ অবস্থায় স্বামীর বাড়িতে না খেয়ে দিনের পর দিন কাটিয়েছেন সন্তানকে নিয়ে যখন সন্তানের বয়স মাত্র ৪ মাস ছিল। তৎকালীন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী থাকা অবস্থায় এ্যাড শ ম রেজাউল করিম মহোদয়ের হস্তক্ষেপে স্বামীর বাসার ঠিকানা হলেও তেমন খোজ খবর নিতেন না স্বরুপকাঠীর বিশিষ্ট ব্যক্তি শামমাহাজনের বড় ছেলে রুমানার স্বামী আঃ সালাম। ঐ সময় সন্তান সহ রুমানাকে বদ্ধঘরে মারার উদ্দেশ্যে বাসার পানির লাইন পর্যন্ত বন্ধ করে দিয়েছিল। রুমানা বলেন তখন থেকে আমাকে এবং আমার সন্তানকে মেরে ফেলার জন্য নানা ধরনের চেষ্টা করে আসছে। রুমানা জানায় আমার স্বামীর ১ম সংসারে তার তিন মেয়ে রয়েছে। এর পর ছালাম আমাকে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। রুমানার গর্ভের ১ম বাচ্চা লাথি মেরে নষ্ট করার অভিযোগ ও করেন ২য় স্ত্রী রুমানা। সেই অভিযোগ তার স্বামী সহ ১ম স্ত্রী ও সন্তানদের বিরুদ্ধে উঠলে বেশ কিছু আঞ্চলিক পত্রিকায় ঐ সময় সংবাদ প্রকাশ পেলে বিষয়টি সচেতন মহলের নজরে আসে। গত ১/৩/ ১৯ এ রুমানাসহ গর্ভের ৬ মাসের বাচ্চাকে পুড়িয়ে মারার জন্য ঘরে আগুন ও দেয় বিবাদীরা। তখন থানা পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস এসে তাদের উদ্ধার করে নেছারাবাদ থানায় নিয়ে আসে। অনেক সংগ্রাম করে একা একা গর্ভের বাচ্চাকে পৃথিবীর মুখ দেখাতে সক্ষম হয় অসহায় রুমানা। রুমানা কান্নাজনিত কন্ঠে বলেন আমার স্বামী এমন ছিল না। বড় বউয়ের অত্যাচারে আমার স্বামী ও দিশেহারা হয়ে পড়েছে। রুমানা কান্না জরিত কন্ঠে সাংবাদিকদের বলেন জানি না আমি আমার সন্তানকে বাচিয়ে রাখতে পারবো কিনা। আমার সন্তানকে ওরা বাঁচতে দেবে না। আমি আপনাদেরকে স্বাক্ষী রেখে বলে যাই আমার সন্তানের কিছু হলে এই ৫ বিবাদীই দায়ী থাকবে। এরাই পরিকল্পিতভাবে আমার সন্তানকে মেরে ফেলার পায়তারা করছে যাতে আমার স্বামীর সম্পত্ত্বি ভোগ দখল করতে পারে। রুমানা তার নিজের ও সন্তানের নিরাপত্ত্বা চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, নেছারাবাদ; অফিসার ইনচার্জ, নেছারাবাদ বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। গত ২০/৮/২০ তারিখ রুমানা নেছারাবাদ থানায় নিজেদের নিরাপত্ত্বা চেয়ে ” বিবাদীরা যে কোন সময় যেকোন ক্ষয় ক্ষতি করতে পারে” এই মর্মে সাধারন ডায়েরী করেন। ডায়েরি নং ১২০৪ । রুমানা বলেন আমি অসহায়, আমি গরীব আমার টাকা পয়সা নেই তাই আমি ন্যায্য বিচার থেকে বঞ্চিত। প্রশাসনের দরজায় দরজায় আমি ঘুরে বেড়াচ্ছি। কোন অদৃশ্য কারনে সবাই নিরব ভূমিকা পালন করছে। যে দেশের প্রধান মন্ত্রী একজন নারী সেই দেশে আমি একজন নারী হয়ে ন্যায় বিচার পাব না, আমার অবুঝ সন্তান কি শেষ পর্যন্ত ও পৃথিবীতে বেঁচে থাকতে পারবে না । আমাকে মন্ত্রী সাহেব ঘর ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। আমি আবার ও আমার সন্তানের নিরাপত্ত্বার জন্য মন্ত্রী মহোদয়ের কাছে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর দ্বারস্থ হবো। প্রয়োজনে প্রধান মন্ত্রীর দ্বারস্থ হয়ে ন্যায় বিচার চাইব।
Leave a Reply