মোঃ সিরাজুল হক রাজু স্টাফ রিপোর্টার।
২৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় বরিশালের উজিরপুর পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বর্তমান মেয়র গিয়াস উদ্দিন বেপারীর নৌকার পালে হাওয়া লাগলেও বিএনপি প্রার্থী শহিদুল ইসলাম খানের ধানের শীষে দোল লাগেনি।
মেয়র পদের জন্য ৩ প্রার্থী ভোট যুদ্ধে অবর্তীণ হলেও ভোটের লড়াইয়ে মাঠে সক্রিয় রয়েছেন আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী গিয়াস উদ্দিন বেপারী ও বিএনপি’র মনোনিত প্রার্থী মো: শহিদুল ইসলাম খান। অপর প্রার্থী ইসলামী আন্দোলনের হাত পাখার কাজী শহিদুল ইসলামের তেমন তৎপরতা নেই। তিন মেয়র প্রার্থীর মধ্যে উঠান বৈঠক, পথসভা ও গণসংযোগ সহ সবধরণের প্রচার-প্রচারণায় এগিয়ে রয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী।
পৌষের হাড় কাঁপানো কনকনে শীতকে উপেক্ষা করে রাত-দিন একাকার করে নাওয়া-খাওয়া ভুলে তিনি গোটা পৌর শহর নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের নিয়ে চষে বেড়াচ্ছেন। গিয়াস উদ্দিন বেপারী তার জয়ের ধারা অব্যাহত রাখতে নিজে পায়ে হেটে ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট প্রার্থনা করছেন। তিনি উজিরপুর পৌরসভাকে তিলোত্তমা পৌর শহরে রূপান্তর করাসহ নানা নাগরিক সুবিধা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোটারদের মন জয় করতে চেষ্টা করছেন।
এদিকে বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে ও দক্ষিনের রাজনৈতিক অভিভাবক মন্ত্রী পদমর্যাদার পার্বত্য শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন পরীবিক্ষণ কমিটির আহবায়ক ও বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ এমপির দিক নির্দেশনায় গিয়াস উদ্দিন বেপারীর জনার্কীণ উঠান বৈঠক ও গণসংযোগে বরিশাল-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট তালুকদার মো. ইউনুস, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতা হাবিবুর রহমান খান ও আনিসুর রহমান আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী সংগঠনের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ অংশ গ্রহণ করায় নির্বাচনে ভিন্ন আমেজ সৃষ্টি হয়েছে। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের জনপ্রিয় হেভিওয়েট নেতা ও শীর্ষ জনপ্রতিনিধিরা দলীয় প্রার্থীর বিজয় নিশ্চিতে প্রচার-প্রচারণায় অংশ নিলেও বিএনপি প্রার্থীর সঙ্গে দলের হেভিওয়েট কোন নেতাকে প্রচার-প্রচারণায় দেখা যায়নি।
এছাড়া স্থানীয় জাতীয় পার্টি, জাসদ ও ওয়াকার্স পার্টি আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী গিয়াস উদ্দিন বেপারীকে আনুষ্ঠানিকভাবে সমর্থন দিয়ে প্রচার-প্রচারণায় নেমে পড়েছেন। স্থানীয় সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. শাহে আলম দলীয় মেয়র প্রার্থীকে বিজয়ী করতে নানা দিক নির্দেশনা দিচ্ছেন। এদিকে পৌরসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে উজিরপুর জুড়ে এখন উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। এক অচেনা নগরীতে পরিনত হয়েছে গোটা পৌর শহর। বিভিন্ন প্রার্থীদের সাঁটানো পোষ্টার ও ব্যানারে ছেয়ে গেছে পুরো উজিরপুর পৌরসভা।
আগামী ২৮ ডিসেম্বর সোমবার উজিরপুর পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ৯ টি ভোট কেন্দ্রে ১১হাজার ৯২৪ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এর মধ্যে ৫ হাজার ৯৩৬ জন নারী ভোটার ও ৫ হাজার ৯৮৮জন পুরুষ ভোটার রয়েছে। এ বছর প্রথম বারের মত ইভিএম পদ্ধতিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সে কারনে ইভিএম পদ্ধতি নিয়ে সাধারন ভোটারদের মধ্যে রয়েছে অনভিজ্ঞতার ভীতি ও কৌতূহল। তার পরও নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে সাধারন ভোটাররা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। এখন পর্যন্ত অপ্রীতিকর কোন ঘটনা ঘটেনি।
নির্বাচন প্রসঙ্গে আ.লীগের মনোনিত মেয়র প্রার্থী বর্তমান মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন বেপারী বলেছেন, তিনি উজিরপুর পৌরসভার প্রথম মেয়র হিসেবে গত পাঁচ বছর সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে পৌর এলাকায় অভূতপূর্ব উন্নয়ন করেছেন। এক সময়ের গ্রামকে তিনি শহুরে রূপ দিয়েছেন। কোভিড-১৯ প্রাণঘাতি নভেল করোনা কালে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে খাদ্য ও পণ্য সামগ্রী নিয়ে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখতে এবং মাদক, বাল্য বিয়ে, সন্ত্রাস ও দুর্নীতি মুক্ত আলোকিত এক তিলোত্তমা পৌরসভা বিনির্মাণে ভোটাররা আবারও তাকেই স্বতঃস্ফুর্তভাবে ভোট দিবেন। সে কারনে তিনি জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী।
অপরদিকে বিএনপি’র মনোনিত ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী শাহিদুল ইসলাম খান বলেছেন-গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনতে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। ভোটাররা কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারলে তিনি জয়ী হবেন। উজিরপুর উপজেলা নির্বাচন অফিসার মো: আলিমউদ্দিন জানিয়েছেন উজিরপুর পৌর সভার নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত করার লক্ষে সব ধরণের প্রস্তুতি রয়েছে।
এদিকে কাউন্সিলর ও নারী কাউন্সিলর প্রার্থীরাও বিজয়ের মালা গলায় পড়তে মুখে প্রতিশ্রুতির ফুলঝুড়ি ফুটিয়ে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। ইতোমধ্যে ৯ টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২ টি ওয়ার্ডে ২জন কাউন্সিলর প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। বিজয়ী হওয়ার মানসে ৭টি ওয়ার্ডে ২২ জন কাউন্সিলর ও নারী কাউন্সিলর প্রার্থী মরণপন লড়ছেন
Leave a Reply